কিডনি আমাদের শরীরের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই অঙ্গটি নিয়ে অবশ্য বেশিরভাগ মানুষেরই তেমন কোনও ভাবনা চিন্তা নেই। আর এই কারণেই বাড়ছে সমস্যা। দেখা যাচ্ছে যে কিডনির অসুখে আক্রান্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উপসর্গ না জানায় তা পৌঁছে যাচ্ছে গুরুতর দিকে। তাই
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিডনির অসুখের লক্ষণ জেনে রাখা জরুরি। কিডনি আমাদের শরীরে ছাঁকনির মতো কাজ করে। দেখা গিয়েছে যে কিডনি দেহের খারাপ পদার্থগুলিকে মূত্রের মাধ্যমে বের করে দেয়। তাই এই অঙ্গটি খারাপ হলে শরীরে জমতে থাকে টক্সিন (Toxin)। এই কারণে কিডনির অসুখ নিয়ে প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এই প্রসঙ্গে কলকাতার বিশিষ্ট মেসিডিন বিশেষজ্ঞ
ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ কিডনি নিয়ে সচেতন নয়। আর বাড়ছে ডায়াবিটিস (Diabetes), প্রেশারের মতো অসুখ। এই পরিস্থিতিতে সমস্যা যে বাড়বে, এটা মাথায় রাখতে হবে। এই দুই অসুখ থেকেই কিডনির সমস্যা বাড়ছে। এবার কিডনির অসুখের দুটি পর্যায় থাকে। প্রথমত থাকে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (Chronic Kidney Disease)। এক্ষেত্রে রোগ থাকে অনেকটা সময়। এমনকী আজীবন
থাকতে পারে। এছাড়া আবার থাকে অ্যাকিউট কিডনির রোগ (Acute Kidney Disease)। এই পরিস্থিতিতে সাময়িক রোগ হয়। তবে দুই ক্ষেত্রেই রোগ লক্ষণ জেনে রাখা খুবই জরুরি। তবেই ভালো থাকতে পারবেন। কী কী লক্ষণ দেখা যায় কিডনির রোগ হলে? (Kidney Disease Symptoms) -kidney-disease-symptoms ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, অনেকসময়ই কোনও লক্ষণ থাকে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা
যায় যেমন- ইউরিন কমে যাওয়া, পা-মুখে ফুলে যাওয়া, রক্তাল্পতা, খিদে চলে যাওয়া, বমি পাওয়া ইত্যাদি। এবার এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলেই প্রতিটি মানুষকে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। তবেই সুস্থ থাকতে পারবেন।
কেন কিডনি ডিজিজ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-
ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, কিডনি ডিজিজের সংখ্যা বাড়ার অনেক কারণ রয়েছে। এক্ষেত্রে সুগার ও প্রেশার হল এই অসুখ হল এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ। এছাড়াও বিভিন্ন ওষুধ যেমন অ্যান্টিবায়োটিক, পেইনকিলার, কোমো থেরাপি থেকে এই সমস্যা হতে পারে। তাই
সতর্ক হয়ে যেতে হবে। ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, কিডনি ডিজিজ বুঝতে চাইলে করতে হয় ব্লাড ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন টেস্ট। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই করা যেতে পারে সমস্যার সমাধান। এছাড়াও করতে হয় ইউরিনের প্রোটিন টেস্ট। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই সমস্যার সমস্যা বোঝা সম্ভব। এটা মাথায় রাখা দরকার। ডা: রুদ্রজিৎ পাল জানান, প্রথমে রোগীর অবস্থা দেখতে হয়। তারপর সমস্যার কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসা করা
দরকার। এই যেমন ডায়াবিটিস (Diabetes) থাকলে তা কমানো ইত্যাদি। এছাড়া কিডনি যাতে খারাপ না হয়, তারও ওষুধ রয়েছে। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে অ্যাকিউট স্তরে ডায়ালিসিস করে প্রাণ বাঁচানো হয়। তারপর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, ডায়েটের মধ্যে
জল মেপে দেওয়া হয়। কার কতটা জল লাগবে তা ঠিক করা হয় রোগের স্টেজের উপর। এছাড়া খেতে বারণ করা হয় নুন (Salt) দেওয়া খাবার। এছাড়া বারণ থাকে ফসফেট যুক্ত খাবার যেমন দুধ। এভাবে একটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে মানুষ অনায়াসে ভালো থাকতে পারেন।