আজকাল বেশিরভাগ শিশুই সিজারের মাধ্যমে জন্ম গ্রহণ করে। তবে অনেক নারীরই প্রত্যাশা থাকে নরমাল ডেলিভারির। গর্ভাবস্থা যে কোনো নারীর জীবনের একটি বিশেষ সময়। কষ্ট এবং খুশির এই বিস্ময়কর সংমিশ্রণে চিন্তা করার এবং যত্ন নেয়ার অনেক কিছু রয়েছে।এটি এমন সময়
যখন আপনি একা নন। আপনি এবং আপনার আনন্দের উৎস আপনার সঙ্গে শারীরিকভাবে সংযুক্ত। আপনি আপনার অনাগত সন্তানের জন্য যেহেতু একটি স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করতে চান, তাই তাকে নিশ্চয়ই স্বাভাবিকভাবে পৃথিবীতে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত হবেন, অ’স্ত্রো পচারের মাধ্যমে নয়। নরমাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসব হলো একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা প্রতিটি নারীর পক্ষেই সম্ভব, কেবল যদি তিনি
গর্ভাবস্থায় নিজের সঠিক যত্ন নেন। গর্ভাবস্থায় ছোটখাটো জটিলতাগুলো স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসবের অন্তরায় না। কিন্তু কিছু বড় জটিলতায় সি-সেকশন লাগবেই। গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক প্রসব নিশ্চিত করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। প্রথম ধাপ হলো আপনাকে গর্ভাবস্থা এবং জন্মদান সম্পর্কে জানতে হবে। এই বিষয়ক কিছু জার্নাল কিংবা বই পড়তে পারেন। ইউটিউবে আজকাল এই সম্পর্কিত ভিডিও পাওয়া যায়
সেগুলো দেখতে পারেন। পরবর্তীতে মানসিক প্রস্তুতির জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, ইয়োগা বা মেডিটেশনের মতো কিছু সাধারণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখুন-
1. ব্যায়াম গর্ভাবস্থায় হবু মাকে পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিতে বলা হয়। খুব ভারী ওজন তুলবেন না, তবে আপনি আপনার পেলভিক পেশী এবং উরুকে শক্তিশালী করতে কিছু ব্যায়াম অনুশীলন করতে পারেন। প্রসব ব্যথা মোকাবেলায় এগুলো সহায়ক। শ্রোণী প্রসারিত করা এবং উরুর জন্য স্কোয়াট অনুশীলন করুন। একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম করুন কারণ আপনার সামান্য ভুল আপনার শিশুর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
2. ডায়েট- গর্ভাবস্থায় মায়ের ভালো পুষ্টির প্রয়োজন হয়। তবে খেয়াল রাখা দরকার যেন অতিরিক্ত খাওয়া না হয়। অতিরিক্ত খাওয়া ওজন বাড়াতে পারে এবং স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে। এমন খাবার খেতে হবে যা পুষ্টি জোগায় এবং আসন্ন মাসগুলোর জন্য মাকে শক্তিশালী করে তোলে।
3. চাপকে না বলুন- মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং চিন্তাভাবনা যাতে মাকে প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্যারেন্টিং সংক্রান্ত বই পড়ুন, বড়দের সঙ্গে কথা বলুন, ইতিবাচক এবং সুখী মানুষদের পাশে থাকুন।
4. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন- সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য শিশুর সঠিক অক্সিজেন সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আপনাকে প্রসবের সময় অনেক লম্বা সময় দম ধরে রাখতে হবে এবং গভীর শ্বাস নিতে হবে। তাই ডেলিভারিকালীন প্রস্তুতির জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন।
5. ম্যাসাজ-গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে নিয়মিত ম্যাসাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাসেজ আপনাকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত রাখতে সাহায্য করবে। এটি জয়েন্টের ব্যথা এবং পেশীর টানও প্রশমিত করবে।
6. নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন- পানি আপনার শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মায়ের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রসবের সময় যে বাড়তি শক্তি প্রয়োজন তা দেওয়ার জন্য পানি গুরুত্বপূর্ণ। পানির প্রয়োজন মেটাতে তাজা ফলের রস খেতে পারেন।