২৯ রাজ্যে নিয়ে বিশাল এক জনসংখ্যার দেশ ভারত। এই দেশে নানা ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও জাতির মানুষ একসাথে বসবাস করে এবং প্রতিটি জাতির খাবার-দাবার এর ধরণও আলাদা হয়ে । মুখরোচক খাবার আমরা কমবেশি সবাই খেতে ভালোবাসি। তাই তো আমরা সব সময়ই চেষ্টা করে থাকি নিজের পছন্দ অনুসারে খাবার খেতে। টক, ঝাল, মিষ্টিসহ আরও কতশত খাবার যা নাম বলে হয়ত শেষ করা যাবে না।




সমগ্র ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পদের রান্না হয়ে থাকে। তবে আপনি কি জানেন ভারতে এমন কিছু জনপ্রিয় খাবার রয়েছে যেগুলো কিন্তু মোটেও ভারতীয় আবিস্কার নয় বরং এগুলো বিদেশী খাবার তবে সমগ্র ভারতবর্ষে কিন্তু এই সব খাবার এত জনপ্রিয় তা বলে বোঝানো যাবে না। আজ আপনাদের জানিয়ে দিব ভারতে জনপ্রিয় এমন সব খবারের নাম যেগুলো বিদেশী কিন্তু ভারতে এর জনপ্রিয়তা ব্যাপক।




সিঙ্গারা: ভারতের জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় অন্যতম হলো সিঙ্গারা। তবে শুধু ভারতেই নয় বাংলাদেশেও সিঙ্গারা ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রায় ৯০% ভারতীয়রা সিঙ্গারা খেতে খুব পছন্দ করে থাকে। তবে দুঃখের বিষয় যে, সিঙ্গারা ভারতে উৎপত্তি হয়নি। এর উৎপত্তি হলো ১৩ বা ১৪ শতকে মধ্য এশিয়ার ব্যবসায়ীদের দ্বারা। আগে হয়ত আপনার এই তথ্যটি জানা ছিল না।




পন্তুয়া: ভারতীয় জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে আরেকটি হলো পান্তুয়া। পান্তুয়া প্রথম মধ্যযুগীয় ভারতে তৈরি হয়। মধ্য এশীয় তুরস্কের আক্রমণকারীরা ভারতে এসে প্যান কেক হতে এটি আবিস্কার করেন। তবে এক নৃতত্ত্ববিদ দাবি করেন যে, মুঘল সম্রাট শাহাজান তার ব্যক্তিগত রাঁধুনী হঠাৎ করে এক রকম কাকতালীয় এটি আবিস্কার করে থাকেন। আর সেই থেকে পন্তুয়ার জন্ম।




চা: রোজ সকালে ঘুম হতে ওঠে ১ কাপ চা না পেলে হয়ত অনেকের চলে না। চা হলো ভারতীয়দের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় একটি পানীয়। চা মূলত চীনে উৎপত্তি হয়। তবে ১৬ শতকের দিকে ভারতেও চলে আসে চায়ের চাষ। সেই হতে আজও ভারতে নানা পাহাড়ী অঞ্চলে হয়ে আসছে চায়ের চাষ।




ফিল্টার কফি: ষোড়শ শতকে কর্ণাটকের বাবা বুদান নামের এক পবিত্র সুফি ব্যাক্তি মক্কা ও মদীনায় তীর্থে গিয়ে সেখানে এই রকমের কফি পান করে তিনি সেই কফির প্রেমে পড়ে যান। এরপর তিনি কর্ণাটকে ফিরে আসার সময় এই কফির নমুনা নিয়ে এসে বাড়িতে বসে প্রথমে বানান এবং তারপর তিনি তার পাহাড়ে এই জাতের কফির চাষ শুরু করে দেন। সেই হতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।




ডাল-ভাত: ডাল-ভাত কিন্তু মোটেও ভারতীয় খাবার নয়। এটির উৎপত্তি হয় নেপালে। বেশিরভাগ ভারতীয়র ডাল-ভাত প্রধান খাদ্য হিসেবে পরিচিত। এমন অনেক ভারতীয় রয়েছেন যে, দিনে যে কোন এক বেলা ডাল ভাত না খেলে যেন তার খাওয়ার পরিতৃপ্তি আসে না।




নান রুটি: দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াতে উৎপত্তি নান রুটির। তবে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবের কারণে ভারতে আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হতে থাকে নান রুটি। তবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর তথ্যনুসারে এটি ফার্সি ও মোঘলদের দ্বারা প্রথম তৈরি হয়েছিল। এই নান রুটি প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে সর্বপ্রথম বানানো হয়েছিল।




রাজমা: এটিও ভারতে ব্যাপক জনপ্রিয়। লাল রংয়ের কিডনির মতো বিনস প্রধানত বানানো হয় প্রথম মেক্সিকোতে। রাজমা দিয়ে মশলাদার গ্রেভি বানিয়ে ভাতের সাথে খাওয়া হয়। তবে রাজমা উত্তর ভারত ও নেপালে খুবই জনপ্রিয়। আপনি যদি কখনো না খেয়ে থাকেন তবে আপনার অবশ্যই খাওয়া উচিৎ।




বিরিয়ানী: বিরিয়ানী দক্ষিণ এশীয় ডিশ হিসেবে বিবেচনা কর হয়। তবে কিছু কিছু শেফের বিশ্বাস যে, বিরিয়ানীর উৎপত্তি হলো পারস্যে। অনেকে আবার দাবী করে থাকেন যে, সম্রাট বাবর ভারতে আসার সময় এর রন্ধন প্রণালী ভারতে নিয়ে আসে। আর সেই হতে আজও বিরিয়ানী ভারতে ব্যাপক জনপ্রিয়।




সুক্তো: করলা ও নানা রকম সবজি দিয়ে বানানো হয় সুক্তো। যা মূলত ভারতীয় হিসেবে পরিচিত। আসলে তখনকার দিনে পর্তুগিজদের দ্বারা এটি সর্ব প্রথম বানানো হয়। পরর্বতীতে এটি আস্তে আস্তে ভারতীয় বিশেষ কিছু মশলা মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এতে দুধ ও মিষ্টি যোগ করে সম্পূর্ণ এক নতুন স্বাদের সুক্তো বানানো যায়। যা কিন্তু ভারতীয়দের আবিস্কার।







