এক হাতে সন্তান আরেক হাতে ট্রাকের রশি! অন্যরকম জীবনযুদ্ধ! – প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ভারতজুড়ে চলা লকডাউনে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। হঠাৎ করে গাড়ি চলাচল বন্ধ হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে ভিন রাজ্যে মহা বিপাকে





পড়েছেন এসব শ্রমিকেরা।অনেকে হাজার হাজার মাইল দূরের পথ হেটে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য রওনা দিয়েছেন।পথে ঘটেছে নানা হৃদয়বিদারক ঘটনা।পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরবস্থার নানা ছবি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বারবার সামনে এসেছে। এবার তেমনই এক ভিডিও সামনে এল। ভিডিওটি ২০ সেকেন্ডের। তাতে দেখা যাচ্ছে ভিড়ে ঠাসা একটি ট্রাকে উঠতে চেষ্টা করছেন কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিক।তার মধ্যে একজন শ্রমিককে





দেখা গিয়েছে এক হাতে ট্রাকের দড়ি ধরে অন্য হাতে কোলের ছোট্ট শিশুটিকে ছুড়ে দিতে চাইছেন ট্রাকে। শিশুটির মা তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন শিশুটিকে। ছত্তিশগড়ের ওই ভিডিওটি আরো একবার ভারতে পরিযায়ী শ্রমিকদের অসহায়ত্বকে প্রকট ভাবে তুলে ধরলো। ভিডিওটিতে দেখা গেছে শাড়ি পরে কষ্ট করে ট্রাকে উঠতে চেষ্টা করছেন এক নারী। পাশাপাশি কোলের শিশুকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে





আরো এক ব্যক্তিকে। এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় কয়েকজন শ্রমিক জানাচ্ছেন, তারা উপায়ান্তর না দেখে তেলেঙ্গানা থেকে বাড়ি ফিরতে ট্রাককেই বেছে নিয়েছেন। এক বৃদ্ধ বলছেন, ‘কী করতাম আমরা? আমরা অসহায়। আমাদের ঝাড়খণ্ডে যেতে হবে।বাধ্য হয়ে ট্রাকে উঠতে হচ্ছে, কেননা আর কোনো উপায় নেই।’ কেন্দ্রীয় সরকারের পরিযায়ীদের জন্য চালানো বিশেষ ট্রেনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি





বলেন, ‘আমরা সে সম্পর্কে কোনো খবর পাইনি। আমরা জানি না তারা আমাদের ফেরানোর কোন ব্যবস্থা করেছে কিনা।’ ট্রাকটির কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা রাজ্য পরিবহণের এক কর্মকর্তা জানালেন, ‘পরিবহণের আর কোনও উপায় নেই।প্রশাসনের উচিত ওদের জন্য বিশেষ বাস চালানো। আমি পরিবহণ দফতরেই আছি। কিন্তু আমার স্তরের লোকের পক্ষে বাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া সম্ভব নয়।’ গত মার্চের শেষ দিকে





এসে ভারতজুড়ে লকডাউন জারি হয়ে যাওয়ার পর থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের গ্রামে ফিরতে চেয়েছিলেন।উপায় না পেয়ে অনেকেই দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে চেষ্টা করেছিলেন। পথেই বহু পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর কথা জানা গেছে। গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রে ১০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে ক্লান্ত হয়ে রেললাইনের উপরে ঘুমিয়ে পড়া ২০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের একটি দলের মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয় ট্রেনে কাটা পড়ে। গত রবিবার আরো একটি পরিযায়ী শ্রমিকদের দলের ৫ জনের মৃত্যু হয় ট্রাক দুর্ঘটনায়।









